প্রকৃতি ও মানুষের সম্পর্ক
নীল আকাশের নিচে,
সবুজের অরণ্যে—
প্রকৃতির কোলে মানুষ,
সদাই খোঁজে তার গন্তব্য।
হাজারো বছর পেরিয়ে গেছে,
মানুষ আর প্রকৃতি,
একসাথে হাতে হাত ধরে
চলেছে দীর্ঘ পথ।
নদীর স্রোতে, বাতাসের হাওয়ায়,
গাছের পাতায়, মাটির ঘ্রাণে—
মানুষের শেকড় গভীরভাবে প্রোথিত।
এই মাটি, এই জল, এই আলো,
আমাদের জীবন গড়ার কারিগর।
প্রকৃতির রূপ, মানুষের মনে
এক অনন্ত মুগ্ধতা বোনে।
তার সৌন্দর্য, তার রহস্য,
জীবনের সব গোপন কথা বলে।
গাছের ডালপালা জুড়ে
যখন বাতাস বয়ে যায়,
তখন মনে হয়—
এই ছোঁয়াতে আছে
আমাদের আত্মার একাংশ।
সমুদ্রের ঢেউয়ের কোলাহলে,
পাহাড়ের গম্ভীর নীরবতায়—
আমরা খুঁজে পাই
আমাদের ভিতরের শূন্যতা।
মানুষের দেহ মাটি থেকে,
আবার একদিন মাটিতে ফিরে।
এই চক্রেই জীবন,
প্রকৃতির সাথে মানুষের মিলন।
কখনো প্রকৃতি হয় মমতাময়ী মা,
কখনো কঠিন শিক্ষক,
যার প্রতিটি উপদেশ
আমাদের জীবনকে শেখায়
নতুন কিছু।
প্রকৃতির মর্ম স্পর্শ করতে,
আমরা ছুটে চলি দূর বনানীতে।
কিন্তু তবুও,
আমরা কি সত্যিই তাকে বুঝি?
নাকি কেবল উপভোগ করি
তার অজানা সৌন্দর্য?
তুমি যে মেঘ, বৃষ্টি হয়ে
আমাদের জীবনে আসো,
তোমার ছোঁয়ায় ফসল ফলায়,
আমরা তবুও অবহেলা করি
তোমার সেবাকে।
গাছের পাতায় যে সুর বাজে,
আমরা কি তাকে শুনি?
পাখির ডাকে যে আহ্বান,
আমরা কি তাকে বুঝি?
মানুষ ব্যস্ত তার নিজস্ব জীবনে,
প্রকৃতি তার পাশে থাকে
নিরবে, অবহেলায়।
তবুও সে দেয় আমাদের
অন্ন, বস্ত্র, আশ্রয়।
কিন্তু এই সম্পর্ক—
কখনো কখনো হয় কঠিন।
প্রকৃতি রাগে, গর্জে ওঠে,
জলোচ্ছ্বাস, ভূমিকম্প, ঝড়—
তখন মানুষ বুঝে,
সে কতটা ক্ষুদ্র,
প্রকৃতির সামনে।
তুমি যে প্রকৃতি,
তুমি আমাদের মাতা—
তোমার সাথে আমরা
নিয়েছি প্রতিজ্ঞা,
তোমার সুরক্ষায়,
তোমার যত্নে।
কিন্তু তবুও,
প্রকৃতির বুকে
আমরা ক্ষত তৈরি করি,
গাছ কাটি, নদী শুকাই,
তোমার সুরক্ষায় আমরা
কতটা দায়িত্বশীল?
তুমি আমাদের পথ দেখাও,
তুমি আমাদের শেখাও—
বেঁচে থাকার অর্থ কী।
তোমার উদারতায় আমরা
প্রতিদিন বাঁচি,
তোমার রূপে আমরা
মুগ্ধ হই বারবার।
তুমি যে বিশাল,
তুমি যে অনন্ত—
তোমার সাথে আমাদের
সম্পর্ক এতই গভীর।
আমরা যখন তোমার বুকে হাঁটি,
তখন আমাদের হৃদয়েও
প্রকৃতির ছাপ পড়ে যায়।
তুমি যদি না থাকো—
আমাদেরও শেষ হবে অস্তিত্ব।
তোমার সাথে বন্ধন ছিন্ন হলে,
আমরা হারাবো আমাদের পরিচয়,
হারাবো জীবনের সেই স্পন্দন।
তুমি আছো, আমরা আছি—
এটাই আমাদের সম্পর্কের মূল মন্ত্র।
তুমি প্রকৃতি,
তুমি আমাদের শাশ্বত বন্ধু।